– শুভাশিস চৌধুরী
বেদুইন মন বেড়িয়ে পরার সুযোগ খুঁজছিল অনেকদিন ধরেই I কিন্তু পায়ের তলায় সরষে রেখেও নড়তে পারছিমাম না। কারণ কলেজে পাঠরতা কন্যার ক্লাস মিস হবার ভয়। অবশেষে তিনি বরাদ্দ করলেন মাত্র ৫ দিন! কিন্তু সে তো উইক এন্ড ট্যুর এর সময়!! কিছু বোঝানো গেল না তাঁকে। তাঁর কড়া নির্দেশ – জানুয়ারীর ১০ থেকে ১৪’র মধ্যে ট্যুর শেষ করতে হবে। সেই ২০১৯ থেকে কার্যত ঘরে আটকে। কোভিডে মহাবলেশ্বের – পুনে – মুম্বাই দর্শন যাত্রা বাতিল করেছি। তারপর থেকে ছোটখাটো ট্যুর কাছে পিঠে হয়েছে দুই এক পিস। এবার বড় ট্যুরের আশায় ছিলাম। কিন্তু বরাদ্দ হল ৫ দিন। যথারীতি নিজের রাজ্যেই ঘুরব ভেবে খোঁজাখুঁজি শুরু করলাম….গাজলডোবা, কালিমপঙ…মালদা, এমনকি বকখালী ইত্যাদি ইত্যাদি। ..কিন্তু কোথাও পছন্দের বুকিং না পেয়ে হতাশ হয়ে যখন এযাত্রা বাতিল করব ভাবছি তখন এক বন্ধুর পরামর্শ – “আগরতলা ঘুরে আয়। ৫ দিনে কেস মিটে যাবে।” বছর খানেক আগে একবার সে উদ্যোগ নিয়েছিলাম বটে। কিন্তু কিছু বন্ধু তাতে জল ঢেলে দিয়েছিল….”কিস্যু নাই আগরতলায়। কিস্যু নাই ত্রিপুরায়..বেকার যাবি…’। আমি এসব কথায় এবার আর পাত্তা দিলাম না। আপনারাও দেবেন না। বন্ধুর পরামর্শ মত প্ল্যান ছকে ফেললাম তবে পরে বুঝলাম অন্ততঃ এক সপ্তাহ হাতে নিয়ে গেলে ভালো হত।
এখানে আরো দুটো কথা বলব। আমার ধারণা আগামী বছর খানেকের মধ্যে ত্রিপুরা পর্যটন মানচিত্রে নিশ্চিত উল্লেখ যোগ্য স্থান করে নেবে। ত্রিপুরায় ট্যুরিজমের যাকে বলে বলে immense potentiality আছে। অসাধারণ প্রকৃতি ও আবহাওয়া। পাহাড়, নদী, জঙ্গল, জনজাতি আর ঐতিহাসিক প্রদর্শনীর এক অনন্য প্যাকেজ ত্রিপুরা। মার খাচ্ছে শুধু দুর্বল রেল যোগাযোগের কারণে।
তবে জেনে রাখুন 2024 এর লোক সভা নির্বাচনের আগে সে চিত্র বদলে যাবে। আর বদলে গেলেই বাঙ্গালী পর্যটকদের ভীড় উপচে পড়বে ত্রিপুরায়।
এখন যাঁরা ত্রিপুরা যান তার বড় অংশ সময় বাঁচাতে বিমানযাত্রা করেন। কিন্তু সস্তার এয়ারলাইন্সেরও ন্যূনতম খরচ অনেক আগে থেকে টিকিট কাটলেও আসা ও যাওয়া মিলিয়ে পড়বে প্রায় ৮ হাজার টাকা মাথা পিছু। ট্রেনে লাগে সময় প্রায় 31 – 35 ঘন্টা। অর্থাৎ প্রায় দেড় দিবস। দূরত্ব ১৬০০ কিমি। আমার আশা এবছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সেই দূরত্ব কমে জাস্ট 550 কিমি তে নেমে আসবে। কারণ?
কলকাতা – আগরতলার বিকল্প রেল লাইন প্রায় প্রস্তুত বাংলাদেশের আখাউড়ার ভিতর দিয়ে। যে রেল পথে কলকাতা থেকে আপনারা সরাসরি পৌঁছে যাবেন আগরতলা মাত্র 10 ঘন্টায় । সহজেই দ্রুত পৌঁছে যেতে পারবেন ঢাকা এমনকি চট্টগ্রাম পর্যন্ত । চট্টগ্রাম হয়ে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যেতে আর বিমান যাত্রা বা ঢাকা থেকে ওভারনাইট বাস যাত্রা করতে হবে না। আপাতত: চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে যুক্ত হয়ে শুরু হচ্ছে ফ্রেট করিডর। দুই দেশ এই লাইনটি দ্রুত চালু করতে বিশেষ উদ্যোগী। দেখে এলাম কাজ প্রায় সব শেষ। প্রস্তুতিও চূড়ান্ত। তাই ভিস্তা ডোম কোচে কলকাতা থেকে আগরতলা যাত্রার ওয়ার্ম আপ শুরু করে দিতে পারেন।
যাইহোক আমি এবারের যাত্রা বিমানেই করলাম। ইন্ডিগো। তিন জনের রাউন্ড ফেয়ার লাগল প্রায় ৩২০০০/- টাকা। সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় আগরতলা সার্চ করে অনেক ট্যুর ডায়েরী পেলাম। একটা জায়গায় শুধু বিঁধছিল…ট্যাকের অনেকটাই তো কেটে নিল বিমান ভাড়া। তাই ছোট ট্যুরেও বড় খরচ হয়ে গেল! অবশ্য ভরসা যোগাল আগরতলায় কর্মরত এক সুজন বন্ধু।
যাইহোক হাতে সময় কম। তাই প্রথমেই রাউন্ড টিকিট বুক করে ফেললাম ।১১ জানুয়ারি সকাল ১০টা নাগাদ আগরতলা ল্যান্ড করলাম। বাঁশের কারুকাজে অসাধারণ সুসজ্জিত বিমানবন্দরের বাইরে আসতেই বন্ধুর ফোন। “দুদিন থাকব না। গাড়িটা পাঠিয়ে দিলাম….”।
আগরতলা বিমানবন্দর অর্থাৎ মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মানিক্য এয়ারপোর্ট শহরের বাইরে অবস্থিত। আমার আর এক বন্ধু হোটেল বুক করে রেখেছিল। শহরের প্রাণকেন্দ্র উজ্জ্বয়ন্ত প্যালেসের কাছে। এয়ারপোর্ট থেকে দূরত্ব প্রায় ১০ কিমি।
সকাল ১১টার হোটেলে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে লাঞ্চ বলে দিলাম। এখানকার অধিকাংশ হোটেলে ডাইনিং হল নেই। হোটেলগুলো হিক ট্যুরিস্ট ফ্রেন্ডলী নয়। মূলতঃ বিজনেজ এক্সিকিউটিভরা এঁদের টার্গেটেড গ্রাহক। এঁদের নিজস্ব কিচেন আছে। বাঙালী খাবার পরিবেশন করে সরাসরি রুমে। সময় নষ্ট না করে লাঞ্চ করে দুপুর ১টার মধ্যে বেড়িয়ে পড়লাম। বন্ধুর গাড়ী সহ সারথী বন্ধু যথারীতি হাজির। কার্যত সেই সারথী বন্ধু স্থানীয় যুবক হয়ে গেলেন আমাদের ট্যুর গাইড।
ত্রিপুরার রাজা রাধাকিশোর মানিক্য দ্বারা স্থাপিত এই রাজপ্রাসাদ এক অনন্য সুন্দর স্থাপত্য কীর্তি। ১৮৯৯ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল প্রখ্যাত স্থপতি আলেক্সান্ডার মার্টিনের পরিকল্পনায়। গ্রীক রোমান ও ইন্দো-মোঘল শৈলীর স্থাপত্যের এক অপূর্ব নিদর্শন এই রাজ প্রাসাদ। এই প্যালেসের তিনটি সুউচ্চ “ডোম” আছে। মাঝেরটি সর্বোচ্চ। ৮৬ ফুট। ২০১৩ সালে স্টেট মিউজিয়ামটি এই প্রাসাদে স্থানান্তরিত করে তদানীন্তন ত্রিপুরার রাজ্য সরকার। ত্রিপুরা তথা উত্তর পূর্বের শিল্প, সংস্কৃতি, ও ইতিহাসের সমস্ত নিদর্শন সহ এই সুবিশাল সংগ্রহশালায় প্রবেশ মূল্য জন প্রতি মাত্র ২০ টাকা। মিউজিয়ামের অভ্যন্তরে ফটোগ্রাফী নিষিদ্ধ।
মিউজিয়ামে বর্তমানে ১৪০৬ টি সংগৃহীত আইটেম আছে। তার মধ্যে প্রত্নতাত্ত্বিক প্রস্তর মূর্তি ৭৯টি। যা প্রায় সবই দেব দেবীর। বুদ্ধদেবের মূর্তিও আছে অনেক। আছে ১৪১টি টেরাকোটার প্লাক।
উজ্জ্বয়ন্ত প্রাসাদ ও তাঁর মিউজিয়াম দর্খে বাইরে এসে স্মৃতি স্বরূপ কিছু ছবি তুলে আবার রাজপথে উঠলাম। কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে গেছিল। “বাবুয়ানা”য় বাটার-ক্রীম সহ মোটা দুধের চা খেয়ে ঠোঁট চাটতে চাটতে আবার রথে উঠলাম। সারথী বললেন গন্তব্য “পূর্বাশা”। ত্রিপুরার সরকারী হ্যান্ডিক্রাফট এম্পোরিয়াম। ত্রিপুরার বিখ্যাত বাঁশের কাজের অপরূপ শিল্পকর্মের ভান্ডার। পকেট স্বাস্থ্যবান হলে আর ইচ্ছে হলে কিনে ফেলতে পারবেন অনেক কিছু। আমি অবশ্য বিমানে অতিরিক্ত ভারের ফাইনের ভয়ে সংক্ষেপে সারলাম।
পূর্বাশা থেকে ফিরতে সন্ধ্যা পেড়িয়ে গেল। সারথী বললেন “চলুন শ্রীজগন্নাথ দেবের দর্শন করে আজকের মত শেষ করি”। সেইমত চললাম আগরতলার বিখ্যাত শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের। তখন সন্ধ্যারতি চলছিল। সকালে দমদমের বাসা থেকে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম শ্রীজগন্নাথকে প্রণাম করে। দিনও শেষ হল তাঁকে প্রণাম করে। জয় শ্রীজগন্নাথ।
রাত ৮ টা নাগাদ হোটেলে নামিয়ে দিয়ে সারথী বললেন পরের দিন সকাল ৮ টার মধ্যে প্রস্তুত থাকতে।
দ্বিতীয় দিন। সারথী বললেন গন্তব্য আপাততঃ উদয়পুরে মাতাবাড়ী বা ত্রিপুরাসুন্দরীর মন্দির ও নীরমহল । কন্যার ইচ্ছায় পরে যুক্ত হল জ্যু। সেপাহিজালার চিড়িয়াখানা।।
ভোজনের পরে গাড়ী ছুটল নীরমহলের উদ্দেশ্যে। মাতা বাড়ী থেকে দূরত্ব ২৬ কিমি। আগরতলা শহর থেকে দূরত্ব ৫৪ কিমি।
ঘন্টা খানেক পরে ফিরে যাবার যাত্রা শুরু হল। এবার গন্তব্য সেপাহিজালার জ্যু। চিড়িয়া ঘর। ওপেন জ্যু। নীরমহল থেকে দূরত্ব ২৯ কিমি। আর আগরতলা শহর থেকে দূরত্ব মাত্র ২৮ কিমি।
সেপাহিজালার জ্যুর এনক্লেভ এ ঢোকার খরচ মাথাপিছু ₹২০/-… তারপরে জ্যুর ভিতরে যাওয়ার খরচ আলাদা। সাথে লাগবে কার পার্কিং ফিজ আলাদা । তবে বিকাল 4 টার পরে আর প্রবেশের টিকিট বিক্রি হয় না। জঙ্গল থেকে
পরের দিন সকাল ৭ টার মধ্যে বেড়িয়ে পড়লাম। পথে এক ধাবায় হল প্রাতঃরাশ। গাড়ী দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলল অমরপুর ফরেস্টের পাহাড়ী রাস্তা ধরে। গন্তব্য ছবিমুড়া। জেলা গোমতী। আগরতলা শহর থেকে ছবিমুড়ার দূরত্ব ৮৫ কিমি। ভালো রাস্তা। কিন্তু স্পাইরাল হিলি রোড ধরে গন্তব্যে পৌঁছাতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা লেগে যায়। ছবিমুড়া পৌঁছাতে আমাদের প্রায় সকল ১১টা বেজে গেল।
ছবিমুড়া যেতে পথে পড়বে অনবদ্য প্রকৃতি। গাড়ী থামিয়ে পাহাড় আর অরণ্যের নিস্তব্ধতা অনুভব করতে পারেন। বিঘ্ন ঘটাবে শুধু পাহাড়ী রাস্তায় জনজীবনের সঙ্গী মোটর সাইকেল আর ট্রেকার। এই পাহাড়ী এলাকা ঝুম পদ্ধতিতে চাষের জন্য বিখ্যাত। ভ্যালীর মত এলাকায় চারদিকে সবুজ। তাতে ফসলের ছড়াছড়ি। আগরতলার সব্জী ভান্ডার বলা হয় অমরপুরে পাহাড়ী গ্রামগুলোকে। সব্জির ক্ষেত, গ্রামীন হাট আর পাহাড়ী জনজীবনের ছবি দেখতে দেখতে এগিয়ে গেলাম ছবিমুড়ার দিকে।
ছবিমুড়া হল গোমতীর নদীর তীর ঘেষা খাড়াই পাহাড়। স্থানীয় লোকগাথায় এর আর এক নাম দেবতামুড়া। মুড়া মানে মাথা বা মস্তক। এলাকাটি একটি ইকো-পর্যটন কেন্দ্রও বটে। লংথরাই থেকে শুরু এই সেডিমেন্টারি রকি রিভার গোমতী সংলগ্ন এই খাড়া পাহাড়ের বাম দিকের দেয়ালে পাথরের খোদাই করা প্যানেলের জন্য বিখ্যাত এই স্থান। যাঁকে বলা যায় টাইমলেস বিউটি। দেবী চক্রমুরার নাম থেকে হয়েছে এই পাহাড়ের নাম। এখানে পাহাড়ী জামাতিয়া সম্প্রদায়ের বাস।এখানে শিব, বিষ্ণু, কার্তিকা, মহিষাসুরমর্দিনী দুর্গা এবং অন্যান্য দেব-দেবীর খোদাই করা বিশাল মূর্তি রয়েছে। এই ছবিগুলি হল আনুমানিক পঞ্চদশ শতকের এক অনন্য শিল্পকীর্তি। জামাতিয়া সম্প্রদায়ের জনপ্রিয় রাজা চিচিংফা’র ঠাকুরদার (নাম পাইনি) সময়ে এই শিল্পকীর্তির সৃষ্টি।
এই সুন্দর প্যানেলগুলি ৯০ ডিগ্রীতে খাড়া পাথরের উপর অনেক দক্ষতার সাথে আঁকা। এক একটি প্যানেলের উচ্চতা ৭ থেকে ১০ মিটার। এই পাহাড়ী প্যানেলগুলি ঘন জঙ্গলে আচ্ছাদিত এবং এই জঙ্গলের মধ্য দিয়ে ট্রেক করার পরেই এই দেবতার আবাসে পৌঁছানো যায়। সেটা সম্ভব ছিল না আমাদের পক্ষে। সহজ রাস্তা বোট রাইড অন গোমতী।
যাইহোক এরপর আমরা ডাঙ্গায় ফিরে আসলাম। ঘাট সংলগ্ন মাঠে জামাতিয়া বন্ধুদের দেওয়া অনেক ফুড স্টল। ক্ষুধা পেলে পাহাড়ী জনজাতিদের ঘরের খাবারের স্বাদ নিতে পারেন। ওঁদের বিখ্যাত খাবার হল “গোদক”। বিন্নি ধানের চাল ধুয়ে পাতায় মুড়ে টাইট করে পানের খিলির মত করে বেঁধে জলে সিদ্ধ করা হয়। তারপর পর্ক বা চিকেন কাবাবের সাথে গরম গরম পরিবেশন করা হয়। অনেকে মাছ আর সব্জির মিক্সড কারী দিয়েও খান। একটি গোদকের মূল্য ₹২০/- । সাইড ডিশ এর মূল্য আলাদা। আপনার সামনেই তৈরী হচ্ছে খাবার। আর আছে ব্যাম্বু স্টাফড পর্ক। পেট ভরসা দিলে চেখে দেখতেই পারেন। সঙ্গে নিতে পারেন গ্রামীণ “মদিরা”। তবে দেখবেন পাহাড়ী রাস্তা। পা যেন না টলে। অন্ততঃ নিজে ড্রাইভ করে গেলে সংযমী থাকাই নিরাপদ।
মন খারাপ হয়ে গেল। ছবিমুড়া ছেড়ে আবার গাড়িতে উঠলাম। সেদিনের শেষ গন্তব্য মনতাং ভ্যালী (Montang Valley)। উদ্দেশ্য সূর্যাস্ত দেখা।
মনতাং পৌঁছাতে প্রায় দেড় ঘন্টা লেগে গেল। মনতাং কে বলা হয় হেভেন ইন ত্রিপুরা। আথাড়ামুড়া পাহাড়ের মাথায় অবস্থায় এক অসাধারণ ভিউ পয়েন্ট। ছবিমুড়া থেকে দূরত্ব ৬৬ কিমি। পুরোটাই পাহাড়ী রাস্তা। শেষের দিকে কিছুটা রাস্তা বেশ খারাপ। এখনও প্রায় ভার্জিন স্পট। ট্যুরিজম প্রোমোশনের কোন দায় দেখলাম না স্থানীয় প্রশাসনের। স্থানীয় যুবক যুবতীরা এখানে আসে মূলতঃ প্রেম বিনোদনে। সম্প্রতি দুটি উদ্যোগী যুবক চালু করেছেন ছোট্ট একটা ভিউ পয়েন্ট টেন্ট। তাঁর প্রবেশ মূল্য ₹২০/-। গাড়ী পার্কিং ₹৫০/-। টেন্টে চা, কফি, রেডিমেড ন্যুদলস পাওয়া যায়। বাঁশ আর কাঠের তৈরী টেন্টের বারান্দায় বসে আপনি সূর্যাস্ত দেখতে পারেন। এখনও সংলগ্ন স্থানে থাকার যায়গা নেই। জল সমস্যা প্রবল। অপর্যাপ্ত সরবরাহ। জল এখানে মহার্ঘ্য বস্তু।
ফেরার পথে গাড়ীর মালিক বন্ধুকে ফোন করলাম। বন্ধু ফিরেছেন। তাই হোটেল না ফিরে সরাসরি ওঁর আবাসেই চলে গেলাম। হোটেল ফিরতে রাত হল। ডিনার শেষে ব্যাগ গুছিয়ে নিতে হল। পরের দিন সকালেই আগরতলা ত্যাগ। কলকাতা ফেরত বীমান যাত্রা।
ত্রিপুরার পর্যটন সম্বন্ধে ধারণা কম ছিল। তাই অপর্যাপ্ত সময়ে অনেক কিছুই দেখা হল না। ফেলে আসলাম অনেক কিছু। বন্ধু বললেন, “আমি আগরতলায় থাকতে থাকতে আবার আসিস। এবার এক সাথে যাব ঘুরতে…” আপাততঃ সেই আশাতেই থাকলাম।