শিশুদের দুধের ব্যবস্থা করলেন মানবিক পুলিশ অফিসার

সুলগ্না দত্ত
কৃষ্ণগঞ্জ, মে ১৬: মানবিকতার এক অসাধারণ নিদর্শন রাখলেন নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত  আধিকারিক সাব ইন্সপেক্টর রাজশেখর পাল।  লকডাউনে বিপর্যস্ত প্রায় একশ আদিবাসী পরিবারের শিশু সন্তানদের মুখে দুবেলা দুধ তুলে দেবার ব্যবস্তা করলেন দরদী এই পুলিশ অফিসার। 
তাঁর থানা এলাকার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী নোনাগঞ্জ গ্রামের আদিবাসী অধিবাসীরা লকডাউনের  শুরু থেকেই পড়েছেন প্রবল আর্থিক সমস্যায়। ওই গ্রামের বিরানব্বইটি পরিবারের কর্তারা  মূলত দিনমজুরের কাজ করতেন। লকডাউনের  কারণে দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় তাঁদের রোজগারের পথ রুদ্ধ।  দুবেলা-দুমুঠো অন্নসংস্থান করাই তাদের পক্ষে হয়ে উঠেছিল দুঃসাধ্য। যদিও রেশনের দেওয়া চাল, আটায় বড়দের পেট ভরলেও কার্যত অভুক্ত থাকতে হচ্ছিল কোলের শিশুদের। তাঁদের জন্য দুধের জোগাড় করতে পারছিলেন না ওই পরিবারের লোকজন। সরকারের পক্ষ থেকে রেশনের চাল,  আটা দেওয়া হলেও শিশুদের দুধ সরবরাহের কোন ব্যবস্থা নেই। পকেট ফাঁকা  তাঁদের। শিশুদের দুধের জোগাড় তারা করবেন কিভাবে? তাই বাধ্য হয়েই কোলের  সন্তানের মুখে দুধের বদলে ভাতের ফ্যান তুলে  দিচ্ছিলেন মায়েরা। 
আদিবাসী ওই পরিবারগুলোর দুর্দশার খবর পৌঁছে গিয়েছিল রাজশেখর বাবুর কাছে। এর আগেও তিনি  অনেক দুঃস্থ-গরিব মানুষদের দিকে বাড়িয়ে দিয়েছেন সাহায্যের হাত। তাই খবরটি তার শোনা মাত্রই ওই গ্রামের সবকটি পরিবারের শিশুদের জন্য বেবি ফুডের  ব্যবস্থা করেন রাজশেখর। শনিবার তিনি ওই গ্রামে নিজে পৌঁছে গিয়েছিলেন বেবিফুড নিয়ে। সেই বেবিফুড তুলে  দিয়েছেন পরিবারের লোকজনদের হাতে হাতে। স্থানীয় থানার বড়বাবুর এমন মানবিক কাজের সাক্ষী ছিলেন কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার ডেপুটি সুপার কৌশিক বসাক, সি-আই  নীহাররঞ্জন রায়। তাঁরা অবশ্য সংবাদমাধ্যমকে কিছু বলতে রাজি  হননি। রাজশেখর বাবু শুধু বলেছেন, ‘আমার থানা এলাকায় সব শিশুই দুবেলা একটু দুধ খাচ্ছে এটুকুই দেখতে চেয়েছিলাম”।

Share the news