- চন্দন সেন
২৭ মার্চ সারা পৃথিবীতে বিশ্ব থিয়েটার দিবস উদযাপিত হয় সাড়ম্বরে। ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইন্সটিটিউট প্রতিবছর আমন্ত্রণ জানান এই পৃথিবীর কোন একজন বিদগ্ধ থিয়েটারকর্মীকে যিনি তাঁর জীবন, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং অধ্যাবসায় দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন সমগ্র থিয়েটার শিল্পকে। এই বছর এই আমন্ত্রণ পেয়েছেন আমাদের এই মহাদেশের একজন বিশ্বস্ত থিয়েটার শ্রমিক। তিনি পাকিস্তানের শাহিদ মাহমুদ নাদিম (Shahid Mahmood Nadeem)। এই মুহূর্তে পাকিস্তানের নাম যেখানে উগ্রপন্থা এবং স্বৈরতন্ত্রের জন্য বিশ্বের সংবাদ শিরোনামে সেখানে জনাব নাদিমকে এই বছরের বিশ্ব থিয়েটার দিবসে বাণী দেওয়ার জন্য আহ্বান একটি বিশেষ তাৎপর্যপুর্ণ ঘটনা নিশ্চিতভাবে ।
জনাব নাদিম ১৯৪৭ সালে ভারতের কাশ্মীর রাজ্যের শোপরে জন্মগ্রহন করেন। ১৯৪৮-এ ভারত-পাকিস্থানের যুদ্ধের পর মাত্র একবছরের শিশু নাদিমকে কোলে নিয়ে রিফিউজি হয়ে পাকিস্থানে চলে আসেন তার মা-বাবা! পাকিস্থানের লাহোরেই বড় হয়েছেন জনাব নাদিম। পড়াশোনা করেছেন লাহোরের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে মনস্তত্ত্ব নিয়ে। পড়তে পড়তেই নাটক লেখা শুরু এবং অল্পকিছু দিনের মধ্যেই তাঁকে পাকিস্থান ছেড়ে রাজনৈতিক নির্বাসন নিতে হয় লন্ডনে। লন্ডনে থাকাকালীন স্থির করেন যে নাটক লেখার কাজটাই করবেন পুরদস্তুর। এবং লন্ডনে বসেই তিনি নাটক লিখেছেন ৮০-এর দশকে পাকিস্থানে জন্ম নেওয়া আজোকা থিয়েটার দলের জন্য।
জনাব নাদিমের ভাষায় – “১৯৮০ থেকে যে দশকের শুরু সেই সময় পাকিস্তানে পুরোপুরি সামরিক শাসন চলছিল। আমাদের আজোকা থিয়েটার ঠিক সেই সময়ই তৈরি করে কয়েকজনের সাহসী তরুন। ওরা সামরিক স্বৈরাচারীদের বিপ্রতীপে প্রতিবাদী কিম্বা সমাজ রাজনীতির প্রতিস্পর্ধী বার্তা আনতে সচেষ্ট হয়|”
আজোকা দলের জন্য লিখতে গিয়ে জনাব নাদিমের সখ্যতা হয় আজোকার নেত্রী মোহতরমা মাদিহা গওহরের সাথে। দুটি সম-মনভাবাপন্নো থিয়েটারপ্রাণ মানুষের সখ্যতা ক্রমশ প্রেম তথা বিবাহে পুর্ণতা পায়। আজোকা থিয়েটারের জন্মলগ্নে পাকিস্থানে মিলিটারি শাসন চলছিল। মুক্তমনা সংস্কৃতি চর্চায় তখন সরকারি রক্তচক্ষু আর অত্যাচারের ভ্রুকুটি। সেই সময় জনাম নাদিম সুফিকবি বুল্লে শাহ (১৬৮০-১৭৫৭) জীবনদর্শন নিয়ে নাটক লেখেন- বুলহা!
জনাব নাদিমের বাণীতে রয়েছে তার সুস্পষ্ট উল্লেখ- “ওই কঠিন সময়ের অনুভব, ক্রোধ, ক্ষোভ আর যন্ত্রণাকে আশ্চর্যভাবে নাটকীয় প্রকাশের জন্য ওরা বেছে নেয় ৩০০ বছর আগের একজন জনপ্রিয় সুফি কবি গায়কের জীবনকে। সেই মহান সুফি কবি বুল্লেশা’র জীবন আর বাণী ছিল ওদের নাটকের বিষয়। বুল্লেশা’র মহৎ সৃষ্টির মধ্যে দুর্নীতিবাজ রাজনীতির কর্তৃত্ব আর ধর্মীয় গোঁড়ামি বারবার প্রশ্নের মুখে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছিল। তাই বুল্লে শাহকে উচ্চারণই হয়ে উঠল আজোকা থিয়েটারের নাটুকে অস্ত্র। আমরা ধরেই নিয়েছিলাম সামরিক প্রশাসনের নাগপাশ আমাদের নাট্যচর্চাকে নিষিদ্ধ করতে পারে, নির্বাসনে পাঠাতে পারে;- কিন্তু বুল্লেশা’র মতো মহান সুফি সাধক কবিকে, মানে তাঁর জীবন ও রচনা কে নিষিদ্ধ করতে সাহস পাবে না। আমরা বুঝে গিয়েছিলাম, বুল্লেশা’র কবিতার মতোই তাঁর যাপনচর্চায় যে নাটকীয়তা যে কুসংস্কারহীনতা যে উদার দর্শনের খোঁজ মেলে তাই হবে ঐ অন্ধকারে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার আয়ুধ।“
জীবিত অবস্থায় অবশ্য ওই সুফি সাধককে ‘ফতোয়া’ আর ‘নির্বাসনে’র মুখে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু অসংখ্য মানুষ আর বুল্লে শায়ের অনুরাগীদের সমর্থন ‘বুলহা’কে ফতোয়াবাজদের হাত থেকে অনেকটাই দাবিয়ে রেখেছিল। “শাসকের অপছন্দ হলেও তারা নিষিদ্ধ করতে পারেনি নাটকটিকে। কারণ বুল্লে শাহ ছিলেন অতি জনপ্রিয় এমনই একজন কবি যার সৃষ্টির সামনে বারবার প্রশ্নের মুখোমুখিহয়েছে দুর্নীতিবাজ, বিভেদকামী, ধর্মীয় গোড়ামি এবং রাজনৈতিক কর্তৃত্ব। বুল্লে শাহর প্রতি সাধারন মানুষের অনুরাগ আর শ্রদ্ধাই ছিল মুলত নাটকটির ছাড়পত্র।
নিজের বাণীতে জনাব নাদিম বলছেন- “বুলহা প্রযোজনায় অগ্রসর হোলাম।তবে লাহোর আর্টস কাউন্সিল সেই সময় আমার লেখা পাণ্ডুলিপি প্রত্যাখ্যান করল এই যুক্তিতে যে এর মধ্যে কোন নাটক নেই, শুধু বিবৃত জীবনী আছে। কিন্তু গ্যয়টে ইনস্টিটিউটের বিকল্প মঞ্চ আমার নাটকটিকে দারুণভাবে গ্রহণের সুযোগ করে দিল”।
“আমি মূলত এমন এক মুসলিম রাষ্ট্রের অধিবাসী যে দেশের সঙ্গে সামরিক স্বৈরাচার আর ধর্মীয় উন্মাদনার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি জড়িয়ে আছে ; প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে এই দেশটির তিন তিনটে যুদ্ধের রক্তিম ইতিহাসও জড়িয়ে আছে। আবার ওই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গেই হাজার হাজার বছরের অখণ্ড ইতিহাসেরও সম্পৃক্তি আর উত্তরাধিকারের অংশীদারত্ব। অথচ আজও আমরা পরমাণু অস্ত্রের শক্তিধর এই দুই ভ্রাতৃপ্রতীম দেশবাসী মুখোমুখি যুদ্ধের আশংকা নিয়েই নিজ নিজ বাসভূমে অপেক্ষারত” । – শাহিদ মাহমুদ নাদিম
বুলহা নাটক নিয়ে একটি আবেগপ্রবন গল্প শুনিয়েছেন জনাব নাদিম- “ঐ সময়ে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্য থেকে একদল শিখ এসেছিলেন পাকিস্তানে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে। সুযোগ মেলায় তারা নাটকটি দেখতে এসে এমন আবেগ-আপ্লুত হয়ে উঠলেন যে দিলখোলা অভিনন্দন জানাতে অভিনয় শেষে তারা মঞ্চে উঠে পড়লেন,- আমাদের অভিনেতাদের আলিঙ্গনে চুম্বনে মোহিত করে দিলেন, কাঁদতে লাগলেন দেশভাগ হওয়া দুই ভিন্ন সম্প্রদায়ের পাঞ্জাবী মানুষ। বুল্লোশা’ তাঁদেরও যে খুব প্রিয় কবি সাধক। তাঁর রচনা জীবন এই ভাবে ১৯৪৭ এর দেশভাগের পর প্রথম খোলাখুলি ভাবে সাচ্চা সুফিদের ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক বিভাজনবিরোধী উদার মানবতার দৃশ্যপট রচনা করেছিল আমাদের সামনে। ১৮ বছর ধরে এই নাটক নিয়ে আমরা দুনিয়া ঘুরছি। এই নাটক দেখে ভারতের এক বিখ্যাত সুধীজন তাঁর লিখিত মূল্যায়নের শিরোনাম দিয়েছিলেন- ‘থিয়েটার যখন তীর্থদর্শন হয়ে ওঠে’।
মিলিটারি শাসনের বিরোধিতা করবার জন্য বিবিধ সময়ে ধর্মনিরপেক্ষ, থিয়েটারপ্রাণ এই মানুষটিকে তিনবার জেলে যেতে হয়েছে। পাকিস্থানের কুখ্যাত মিঞায়ালী জেলে বসে নিজে নাটক লিখে কয়েদিদের দিয়ে প্রতি সপ্তাহে অভিনয় করিয়েছেন। এ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাকে “প্রিজনার অফ কনসাইন্স” উপাধিতে ভুষিত করেছিল। জনাব নাদিমের কথায়- “আমি মূলত এমন এক মুসলিম রাষ্ট্রের অধিবাসী যে দেশের সঙ্গে সামরিক স্বৈরাচার আর ধর্মীয় উন্মাদনার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি জড়িয়ে আছে ; প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে এই দেশটির তিন তিনটে যুদ্ধের রক্তিম ইতিহাসও জড়িয়ে আছে। আবার ওই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গেই হাজার হাজার বছরের অখণ্ড ইতিহাসেরও সম্পৃক্তি আর উত্তরাধিকারের অংশীদারত্ব। অথচ আজও আমরা পরমাণু অস্ত্রের শক্তিধর এই দুই ভ্রাতৃপ্রতীম দেশবাসী মুখোমুখি যুদ্ধের আশংকা নিয়েই নিজ নিজ বাসভূমে অপেক্ষারত ।”
পরবর্তিকালে উনি কাজ করেছেন এ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের আন্তর্জাতিক প্রচার সংগঠক এবং এশিয়া মহাদেশের জনসংযোগ আধিকারিক হিসাবে কাজও করেছেন। সদস্য ছিলেন “থিয়েটার উইদাউট বর্ডার” মুভমেন্টেরও! জনাব নাদিম ৫০টির অধিক নাটক লিখেছেন মুলত পাঞ্জাবী এবং উর্দু ভাষায়। নিজের নাটক ছাড়াও অনুবাদ করেছেন ব্রেকেটের বহু নাটক। পাকিস্থানের প্রত্যন্ত প্রান্তর ছাড়াও তার নাটক অভিনীত হয়েছে ভারত, ইউরোপ এবং আমেরিকার বিভিন্ন সম্মানজনক রঙ্গমঞ্চে। ইংরাজীতে অনূদিত হয়ে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, নিক হার্ন পাব্লিশার্স প্রমুখ স্থান থেকে প্রকাশিত হয়েছে তার নাট্যরচনা। বিবিসিতে উর্দু সাহিত্য বিভাগে তার রচনা স্থান পেয়েছে অনেকবার।
জীবনে বহু ডক্যুমেন্টারি রচনা করেছেন তার মধ্য উল্লেখযোগ্য পাকিস্থানি মিউজিয়াম, কবি ইকবাল, চিত্রশিল্পী সাদেকির উপর। সমকালীন সামাজিক সমস্যা, কুসংস্কার, ধর্মীয় অনুশাসন, নারীদের উপর অত্যাচার, জাতি-বর্ণ বিভাজন, মতপ্রকাশের স্বাধিনতা, সংখালঘুদের উপর নিপীড়ন, জলবায়ু, সুফিতত্ত্ব এবং শান্তি- জনাব নাদিমের নাট্যচর্চার প্রিয় কিছু বিষয়। তার লেখনী কখনো আধুনিকতার সাথে প্রাচীনত্বের মেলবন্ধন, আবার কখনো সুপ্রাচীন লোকশিল্পের সাথে অধুনা রাজনীতির সেতু রচনা করেছে সুনিপুনভাবে। তার নাটকে সংগীত একটি মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে কাজ করেছে। নিজের আজোকা থিয়েটার এবং লাহোর ইনস্টিটিউট অফ আর্ট এন্ড কালচারে তিনি নাট্যরচনাশৈলির উপর শিক্ষার ব্যবস্থাও করেছেন এই ৭৩ বছরের তরুন।
দু’বছর আগে স্ত্রী গওহরের মৃত্যুর পর জনাব নাদিমই আজোকা থিয়েটারের প্রধান মুখ। জনাব নাদিম বলেছেন- “আমি একজন ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ আমার সুফীবাদী চর্চার ক্ষেত্র মূলত নাট্য সংস্কৃতি।… আমার বিশ্বাস এখন আমরা সবাই একসঙ্গে থিয়েটারের মাধ্যমে আত্মিক পরিসরের বিস্তারে সচেষ্ট হতে পারি।- অতীতের সঙ্গে বর্তমানের মেলবন্ধনের প্রয়াসী হতে পারি, দুনিয়াজুড়ে সব রকমের মানুষ যে অনিবার্য ভবিষ্যতের মুখোমুখি হচ্ছে তার দিকে নজর দিতে পারি, যেখানে নবীন-প্রবীণ কিংবা দাদু-নাতির একই ভবিতব্য অপেক্ষায় আছে।মঞ্চাভিনয় করতে করতে থিয়েটারের গভীর দর্শন আমাদের আলোড়িত করে, যা সমাজ পরিবর্তনের অগ্রদূত হবার ভূমিকা নিতে আমাদের উৎসাহ দেয়, থিয়েটারের অন্তর্গভীরের যে দর্শন আমাদের প্রাণিত করে, এগিয়ে যেতে বলে তার সাধনায় মত্ত হতে পারি আমরা”
সমকালীন প্রেক্ষাপটে জনাব নাদিমের দর্শন কিন্তু অশ্রুতপূর্ব, যখন তিনি বলেন- “দুনিয়ায় আজ একদিকে যেখানে গোঁড়ামি মৌলবাদী ঘৃনা আর হিংসা আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে, এক জাতির বিরুদ্ধে অন্য জাতিকে যেভাবে ‘রনং দেহি’ মুর্তিতে দেখা যাচ্ছে, সাম্প্রদায়িক ঘৃণার যেভাবে বিস্তার চলেছে, অন্যদিকে শিশুরা মরছে অপুষ্টিতে, সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে মায়েরা মরছে চিকিৎসাহীনতায় অথবা ভুল চিকিৎসায়, বিদ্বেষের তত্ত্ব ছড়িয়ে পড়ছে জোর গতিতে তার প্রেক্ষিতে বলা যায় এই গ্রহ এখন সাময়িকভাবে পরিবেশগত আর পরিস্থিতিগত সংকটের ডুবতে বসেছে। এই মহাপ্রলয়ের সামনে থিয়েটারই এক বিশাল পরিত্রাতার ভূমিকা নিতে পারে।
দক্ষিণ এশিয়ায় এখনো একটা প্রাচীন রীতি প্রচলিতঃ- মঞ্চকে প্রণাম করে দর্শকের মুখোমুখি হন শিল্পীরা। সমাজ সংস্কৃতির সঙ্গে যে গভীর ধ্যানমগ্নতার সম্পর্ক তারই প্রতিফলন ঘটে এই ধরনের বিনম্র নিবেদনে। সমকালীনতার সঙ্গে এই পবিত্র আত্মনিবেদনের প্রয়াসেই হয়তো দর্শকদের মধ্যে থিয়েটারের সূত্রে তীর্থ দর্শনের পুণ্যার্জন সূচনা হতে পারে।
এই বিশ্বের যেখানে যখনই কোন ফ্যাসিস্ট শক্তির উত্থান ঘটেছে তখনই তারা সবসময় চেষ্টা করেছে বুদ্ধিজীবীদের মাথাগুলোকে হয় কিনে নিতে নয়ত বন্দী করে নির্বাসনে পাঠাতে। আজ আমরা আমাদের শত্রুরাষ্ট্র বলতে যে পাকিস্থানকে এক কথায় চিহ্নিত করি বা বিন্দুমাত্র অপছন্দে কথায় কথায় পাকিস্থানে নির্বাসনের হুমকি দিয়ে থাকি… একটু ভেবে দেখবেন থিয়েটারের আন্তর্জাতিকতা সার্থক হয়ে ওঠে তখনই যখন জনাব নাদিমের পুর্বসুরী হিসাবে ২০০২ সালে আমাদের দেশের গিরিশ কারনাডের দেওয়া বিশ্বনাট্য দিবসের বাণীর দিকে তাকাই।
শ্রী কারনাড বলেছিলেন যে থিয়েটার যখন সমকালীন সমস্যাগুলো এড়িয়ে নিরাপদে থাকার চেষ্টা করে “তখনই থিয়েটার নিজের মৃত্যু পরোয়ানায় স্বাক্ষর করে।” কোথাও কি মিল পাচ্ছেন বন্ধু? মনে কি হচ্ছেনা যে জনাব নাদিম এবং শ্রী কারণাড একই পংক্তিতে দাঁড়িয়ে শেকল ছিঁড়বার জন্য জেহাদ ঘোষনা করছেন? থিয়েটারের বাঁধা ডিঙাবার খেলা কেবল পাকিস্তানে কেন, এখন এখানে কি নয়? বরং জিজ্ঞেস করা ভালো, এ’ পৃথিবীর কোন স্থানে নয়? এখানেই জনাব নাদিমের দর্শন আর বক্তব্যের সার্থকতা।
লেখক পরিচিতি: বাংলার সমকালীন নাট্য জগতে চন্দন সেন (জন্ম ১৯৪৪) একটি উল্লেখযোগ্য নাম। পেশায় প্রাক্তন শিক্ষক হলেও চন্দন বাবুর প্যাশন নাটক । তাঁর জনপ্রিয় সৃষ্টিগুলির মধ্যে রয়েছে ‘দুই হুজুরের গপ্প’, ‘জ্ঞান বৃক্ষের ফল’, ‘দায়বদ্ধ’ , ‘অনিকেত সন্ধ্যা’, ‘সাধুসঙ্গ’, ‘বিপদজনক’, ‘দেওয়াল লিখন’, ‘কর্ণাবতী’ । অগণিত দর্শকের ভালোবাসার স্বীকৃতি হিসাবে মিলেছে রাজ্য নাট্য একাডেমি পুরস্কার, দীনবন্ধু মিত্র পুরস্কার, রাজ্য নাট্য সংগীত নৃত্য দৃশ্যকলা একাডেমি পুরস্কার, সৃজনী পুরস্কারসহ অনেক সন্মান।