ডায়মন্ডহারবারের মগড়া খালে পাওয়া গেল বিপদজনক ‘এলিগেটর গার’ (Alligator Gar) মাছ।
বৃহস্পতিবার সকালে শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের লেনিন নগর এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা হুগলী নদীর সাথে যুক্ত খালের জলে ভাসতে দেখেন কুমীরের মত দেখতে এই মাছটিকে।
প্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে উত্তর আমেরিকা তথা মেক্সিকোর সমুদ্র উপকূলে মূলত দেখা যায় এই প্রজাতির মাছ। সর্বভূক এই ম্যাচটি ফ্রেশ ওয়াটার বা মিষ্টিজলের পাশাপাশি নোনা জলে সমান ভাবে বাঁচতে পারে। বিজ্ঞানীদের মতে এলিগেটর গার জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্যের ক্ষেত্রে একটি বড় রকমের বিপদ বা থ্রেট তাঁর আগ্রাসী সর্বভূক চরিত্রের জন্য।
প্রায় ৫ ফুট লম্বা টর্পেডো আকৃতির মাছটির শরীর এনামেলের মত দেখতে শক্ত ধারালো আঁশ দ্বারা আবৃত। মাছটির ওজন ছিল প্রায় ২০ কেজি। বন দপ্তরের এক শীর্ষ কর্তা জানালেন যে গার মাছের মাংস খুব একটা সুস্বাদু নয়।
ডায়মন্ড হারবারের স্থানীয় সূত্রে জন্য জানা গেছে, রূপা মিস্ত্রী নামের একজন গৃহবধূ সর্বপ্রথমে মাছটিকে অর্ধ-সচেতন অবস্থায় নদীতে ভাসতে দেখেন। “কুমীরের মতো দেখতে এই প্রাণীটাকে
কিন্তু কিভাবে অ্যালিগেটর গার মাছ হুগলীর খাড়িতে প্রবেশ করল বন দপ্তরের কর্মকর্তারা এখনও পর্যন্ত তার কোনও সূত্র খুঁজে পাননি। “আমরা সাম্প্রতিক অতীতে মহারাষ্ট্র এবং কেরালার উপকূলীয় অঞ্চলে এলিগেটর গার পাওয়াগেছে বলে জেনেছি। কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় অঞ্চলে এই ধরনের মাছ সম্ভবত এই প্রথম দেখা গেল। আমাদের অনুমান যে এই মাছটি সম্ভবত একোয়ারিয়াম এ রাখার উদ্দেশ্যে পাচার করা হয়েছিল”, জানালেন একজন বন দপ্তরের এক আধিকারিক।
একটি এলিগেটর গার দৈর্ঘ্যে ৮ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। তারা উচ্চ লবণাক্ততার পাশাপাশি মিষ্টি জলে বা ফ্রেশ ওয়াটারেও দীর্ঘকাল বেঁচে থাকতে পারে। মিষ্টি জলে গার এবং লবণাক্ত জলে ইলিশের মতো কার্প প্রজাতির মাছ অর্থাৎ রুই, কাতলা জাতীয় মাছের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে, জানালেন ডাঃ সান্যাল।
“আমার ধারনা যে এই জাতীয় মাছ অ্যাকোয়ারিয়াম ব্যবসার জন্য বা গেমিংয়ের জন্য আনা হতে পারে। কিন্তু পরে হয়ত এটিকে সামলাতে না পারার ফলে বা রোজকার খাদ্য যোগান সমস্যার
পাশাপাশি তাঁর দাবী যে এই ধরনের বিপদজনক মাছের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিদেশ থেকে আনা বা আমদানী করা মাছের তালিকা অবিলম্বে সংশোধন করার। তাঁর পরিস্কার বক্তব্য, “দেশের নদি নালা জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে হলে এই এধরনের মাছের অনুপ্রবেশ ঠেকানো অত্যন্ত জরুরী”।